আজকে ১৯ মে–>বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস
আজ ১৯ মে, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে হেপাটাইটিস টেস্টিং ডে, যা ভাইরাল হেপাটাইটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরীক্ষা ও চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।
হেপাটাইটিস: একটি নীরব মহামারি
হেপাটাইটিস হলো লিভারের প্রদাহ, যা সাধারণত ভাইরাসজনিত। প্রধানত পাঁচটি ভাইরাস—হেপাটাইটিস A, B, C, D, এবং E—এই রোগের জন্য দায়ী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত, এবং প্রতিবছর ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ হেপাটাইটিস-সম্পর্কিত জটিলতায় মারা যান।
হেপাটাইটিস টেস্টিং ডে: উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
হেপাটাইটিস টেস্টিং ডে প্রথম পালন করা হয় ২০১২ সালে, এবং ২০১৩ সালে এটি জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পায়। এই দিনের মূল উদ্দেশ্য হলো হেপাটাইটিস B ও C সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানুষকে তাদের স্বাস্থ্য অবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য উৎসাহিত করা। অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও উপসর্গহীন থাকেন, ফলে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা বিলম্বিত হয়। এই দিনটি সকল প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত একবার হেপাটাইটিস B ও C পরীক্ষার জন্য উৎসাহিত করে।
HHS.gov
হেপাটাইটিস B ও C: প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
হেপাটাইটিস B প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ, যার জন্য কার্যকরী ভ্যাকসিন রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নবজাতকদের জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদানের সুপারিশ করে। অন্যদিকে, হেপাটাইটিস C-এর জন্য বর্তমানে কোনো ভ্যাকসিন না থাকলেও, আধুনিক ওষুধের মাধ্যমে ৮–১২ সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেন।
CDC
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে হেপাটাইটিস একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষ করে হেপাটাইটিস B ও C-এর সংক্রমণ হার উল্লেখযোগ্য। অনেকেই রোগ সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় এবং পরীক্ষার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারেন না। সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা হেপাটাইটিস প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, তবে আরও ব্যাপক সচেতনতা ও পরীক্ষার প্রয়োজন।
আপনি কী করতে পারেন?
পরীক্ষা করুন: নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের হেপাটাইটিস B ও C পরীক্ষার জন্য উৎসাহিত করুন।
টিকা নিন: হেপাটাইটিস B-এর ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন এবং নবজাতকদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করুন।
সচেতনতা বৃদ্ধি করুন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেপাটাইটিস সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করুন।
চিকিৎসা গ্রহণ করুন: যদি আপনি আক্রান্ত হন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
উপসংহার
হেপাটাইটিস একটি নীরব ঘাতক, যা সচেতনতা, পরীক্ষা, এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য। আজকের দিনে আমরা সবাই মিলে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করি এবং একটি হেপাটাইটিস-মুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি।
0 Comments